বাগধারা | অর্থ |
---|
আইডিয়া | মনোগত বিষয় (মাথায় একটা আইডিয়া এসেছে)। |
আইতে ছাগল, যাইতে পাগল | দেরী সয় না, ধৈর্যহীন। |
আইবুড়ো পথ বদলানো/ভাঁড়ানো | প্রচলিত বা ব্যবহৃত পথ পরিবর্তন করা; একপথ দিয়ে যাওয়া এবং অন্যপথ দিয়ে আসা। |
আইল্যাণ্ড | যেকোন বিচ্ছিন্ন উঁচু জায়গা। |
আউট | সংশোধনের বাইরে; বেসামাল (আকণ্ঠপানে ব্যাটা একেবারে আউট)। |
আওয়াজ তোলা | উচ্চস্বরে দাবী তোলা; তীব্র প্রতিবাদ করা (ন্যায়বিচারের জন্য চারিদিকে আওয়াজ উঠছে)। |
আওয়াজ দেওয়া | বিদ্রুপাত্মক ধ্বনি দেওয়া (পিছন থেকে আওয়াজ দিচ্ছে); তুলনীয়- বিড়াল ডাকা। |
আঁচলধরা | ব্যক্তিত্বহীন পুরুষ, স্ত্রৈণ, স্ত্রীলোকের নির্দেশে চলা; সমার্থক বাগধারা- আঁচলের নিচে থাকা; পাঠান্তর- অঞ্চলধরা। |
আঁচা আঁচি | পরস্পরের দোষ অনুসন্ধান। |
আঁটআঁট | অল্পকষা (জামাটা আঁটআঁট মনে হচ্ছে)। |
আঁটকুড়ের/কুড়ির ব্যাটা/বেটি | অবৈধ সন্তান- নীচুস্তরের গ্রাম্য গালিবিশেষ। |
আঁটসাঁট | কড়াকড়ি; ঢিলে নয় এমন টানটান (আঁটসাঁট পোষাক); |
আঁটাআটি/ আঁটিসাটি | হাতটা্ন, নিজের পাওনাগণ্ডা বুঝে নেওয়ার প্রতি যত্ন; স্বার্থপরতা (নিজের বেলায় আঁটিসাঁটি পরের বেলায় দাঁতকপাটি)। |
আঁটি চোষা | অসার বস্তুগ্রহণ; সার জিনিস থেকে বঞ্চিত হওয়া (সময়মত এলে না এখন বসে আঁটি চোষো)। |
আঁটু বাঁটু | নড়বড়ে ভাব; বার্ধক্যের কারণে জড়সড় ভাব (বৃদ্ধ চলনেবলনে আঁটুবাঁটু)। |
আঁটুনিকসুনি সার | কাজের কিছুই নয় কেবল আড়ম্বরমাত্র; শুধু কথায় আসর সরগরম করে, কাজের বেলায় কিছু না। |
আঁটোসাটো | টানটান, দৃঢ়বদ্ধ, স্মাভাবিক মাপের চেয়ে ছোট (আঁটোসাটো ব্যবস্থা, আঁটোসাটো জামাকাপড়) |
আঁত খালি | পেটে অন্ন নেই। |
আঁত পাওয়া ভার | খুব চাপাস্বভাবের লোক, যার মনের অভিপ্রায় জানা মুশকিল। |
আঁত বুঝে চলা | মনোভাব বুঝে চলা। |
আঁতমরা | অল্পভোজী বা পরিপাকশক্তিহীন। |
আঁতলামি/আঁতলামো | বুদ্ধিজীবীর অনুকরণ, পাণ্ডিত্য প্রদর্শনের চেষ্টা, নকলপণ্ডিতি। |
আঁতিপাঁতি খোঁজা | প্রতিস্থানে/চারিদিকে/তন্নতন্ন করে/পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে/সর্বত্র খোঁজা (আঁতিপাঁতি করে খোঁজ।); সমার্থক সহচরশব্দ- পাতিপাতি খোঁজা; পাতিপাতি করে খোঁজা |
আঁতুপুঁতু করা | আদরের সন্তানের প্রতি অতিরিক্ত যত্ন নেওয়া (ছেলেকে নিয়ে বেশি আঁতুপুঁতু করা ভাল নয)। |
আঁতুড়ে খোকা/ছেলে | ব্যঙ্গার্থ- নিতান্ত শিশু। |
আঁতে ঘা দেওয়া | কারো দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে অন্তরে/ইজ্জতে ঘা দেওয়া (আঁতে ঘা দিয়ে কথা বলো না।) |
আঁতের টান | অন্তরের টান (আঁতের টানে প্রতিবছর দেশে ফিরি) |
আঁতেল | বিদ্রুপে- বুদ্ধিজীবীর ধরনধারণ অনুকরণকারী ব্যক্তি (ব্যাটা আঁতলামি করছে) |
আঁদাড়-পাঁদাড় | আবর্জনা ভর্তি স্থান, আস্তাকুঁড় (আঁদাড়-পাঁদাড় পেরিয়ে বাড়ি ঢুকলাম।) |
আঁধার ঘরের আলো/প্রদীপ/বাতি/মাণিক | দুঃখীর ঘরের একমাত্র সুখের বস্তু (পুত্রটি ছিল বিধবার আঁধার ঘরের মাণিক)। |
আঁধারে ঢিল ছোঁড়া | আন্দাজে কিছু করা; কোন বিষয়ে সঠিক না জেনে আন্দাজে কিছু বলা। |
আঁধারের আলো/বাতি | তাপিত হৃদয়ে আনন্দ দানকারী বস্তু |
আঁস্তাকুড়ের পাত/পাতা | হেয় ব্যক্তি; নীচমনা ব্যক্তি |
আককাটা | কাণ্ডজ্ঞানহীন মূর্খ; যে কেবল হিজিবিজি রেখা টানে, লিখতে জানে না (আক কাটাটা কি যে লিখেছে পাঠোদ্ধার করতে পারছি না।) |
আককুটে/আকখুটিয়া/আকখুটে | আবদারে; জেদী; অতিরিক্ত বায়না করে এমন (আককুটে শিশু)। |
আককুটে/আকখুটিয়া/আকখুটে | অমিতব্যয়ী; অপব্যয়ী; উড়ণচণ্ডে; জিনিষের প্রতি যে যত্ন নেয় না; সঞ্চয় করতে পারে না; লক্ষ্মীছাড়া। |
আকখুটের দশা | অসঞ্চয়ীর লক্ষণ; দারিদ্রের লক্ষণ; দিন আনে দিন খায়; যখন যা আয় করে তখনই তা ব্যয় করে; যত্র আয় তত্র ব্যয়। |
আকচাআকচি/ আখচাআখচি | পরস্পর ঈর্ষা-দ্বন্দ্ব; রাগারাগি; রেষারেষি (সংসারে আকচাআকচি লেগেই আছে।) |
আকচার/ আকছার | প্রায়ই; সর্বদা (ভাইয়ে ভাইয়ে মারামারি আকছার দেখা যায়।) |
আকটবিকট | বিকটাকার বিশ্রী আকৃতি (ভয় পেয়ে আকটবিকট করছে।)। |
আকণ্ঠ | গলাপর্যন্ত; সম্পূর্ণভাবে; সর্বতোভাবে (ঋণে আকণ্ঠ নিমজ্জিত)। |
আকবরের আমল | অনেকদিন আগের কথা; সমার্থক বাগধারা- বাবরের আমল; মান্ধাতার আমল, হোসেনশাহর আমল ইত্যাদি। |
আকর্ণবিস্তৃত হাসি | সারামুখ ছড়িয়ে হাসি। |
আকলমন্দি | আক্কেল; চতুরতা; বিচক্ষণতা; বিচারবুদ্ধি; বুদ্ধিমত্তা (বয়স তো হল আকলমন্দি হবে কবে?) |
আকাট মূর্খ | জড়বুদ্ধিসম্পন্ন; নিরেট বোকা; মহামূর্খ |
আকার-ইঙ্গিতে | চোখ ও মুখের ভঙ্গীতে (আকার-ইঙ্গিতে কি যেন বলতে চাইছে)। |
আকাল১ | অভাব (আকাল পড়েছে আলুর বস্তা, মনের মত হয়নি সস্তা), দুঃসময়; দুর্ভিক্ষ (আকালে কিনা খায় পাগলে কি না কয়)। |
আকাশকুসুম | অবাস্তব/অলীক/কাল্পনিক বিষয়বস্তু, যার অস্তিত্ব নেই; অলীক কল্পনা; |
আকাশ-চাওয়া | আকাশের দিকে চেয়ে অপেক্ষা করা হয়েছে |
আকাশচুম্বী | অত্যন্ত উচ্চ (আকাশচুম্বী অট্টালিকা); সমার্থক বাগধারা-গগনস্পর্শী। |
আকাশ ছোঁয়া | অতি উচ্চে ওঠা, অনেক বড় হওয়া; খুব উন্নতি করা (আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন না দেখলে বড় হওয়া যায় না), অত্যন্ত বেশি হওয়া (জিনিষপত্রের দাম আকাশ ছুঁয়েছে।)। |
আকাশ থেকে কথা বলা | অহঙ্কারী হওয়া; বড়বড়কথা বলা (দু’পয়সার মুখ দেখে সে আকাশ থেকে কথা বলা শুরু করেছে।) |
আকাশ থেকে পড়া১ | অপ্রত্যাশিত ঘটনায় বা অজানা বিষয় হঠাৎ জানতে পেরে অত্যন্ত বিস্মিত হওয়া, না-জানার ভান করে বিস্ময় প্রকাশ করা (আমার কথা শুনে সে যেন আকাশ থেকে পড়ল)।। |
আকাশদীপ | কার্তিকমাসে সন্ধ্যাকালে উঁচুবাঁশের মাথায় জ্বেলে রাখা বাতি; |
আকাশদুহিতা/আকাশনন্দিনী | প্রতিধ্বনি; বজ্রনির্ঘোষ (‘বুঝিলাম এতক্ষণে কে তুমি ডাকিছ আকাশনন্দিনী’)। |
আকাশ ধরা | বৃষ্টি থামা (মনে হচ্ছে এবার আকাশ ধরবে)। |
আকাশপাতাল | সর্বত্র; স্বর্গ থেকে নরক (‘আকাশপাতাল খুঁজিস যারে এই দেহে সে রয়’)। |
আকাশপাতাল এক করা | অসম্ভবকে সম্ভব করা (ভারতের স্বাধীনতার জন্য মহাত্মা গান্ধি আকাশপাতাল এক করেছিলেন)। |
আকাশপাতাল খোঁজা/তোলপাড় করা | সর্বত্র তন্নতন্ন করে খোঁজা (এ জিনিস আকাশপাতাল খুঁজেও তুমি পাবে না)। |
আকাশপাতাল চিন্তা/ভাবনা | উদ্দেশ্যহীন নানাপ্রকার দুশ্চিন্তা/দুর্ভাবনা; যে চিন্তা বা ভাবনার অবধি নেই (আকাশপাতাল চিন্তায় মন ভারাক্রান্ত হয়ে আছে)। |
আকাশপাতাল তফাৎ/পার্থক্য | প্রচুর/বিপুল/বিশাল/বিস্তর ব্যবধান (দুই ভাইয়ের আচার-আচরণে আকাশপাতাল তফাৎ)। |
আকাশপাতাল ভেবে না পাওয়া | ভাবতে গিয়ে দিশেহারা/বিভ্রান্ত/বিমুঢ়/বিহ্বল হওয়া। |
আকাশবন্যা | ভারি বৃষ্টিপাতে প্লাবন। |
আকাশবাণী | অশরীরী বাক্য; দৈববাণী (‘হইল আকাশবাণী অন্নদা আইলা’)। |
আকাশবিহারী | কল্পনাপ্রবণ; কল্পনার জগতে বাস করে এমন; |
আকাশ ভাঙ্গা | প্রবল বৃষ্টিপাত (আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নামল)। |
আকাশ ভেঙ্গে পড়া (মাথায়) | আকস্মিক বিপদে ভাবনাচিন্তায় দিশাহারা হওয়া (চাকরিটা হারিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে)। |
আকাশ শয়ন | উন্মুক্তস্থানে শোয়া। |
আকাশ হাতে পাওয়া | দুরাশা পূর্ণ হওয়া, বিনাপ্রচেষ্টায় দুর্লভবস্তু হাতে পাওয়া বা পাওয়ার আশ্বাস পাওয়া। |
আকাশে ওড়া | আনন্দে আত্মহারা হওয়া; কল্পনার জগতে বাস করা; |
আকাশে তোলা | প্রাপ্যের অতিরিক্ত প্রশংসা করা (আকাশে তুলে ছেলের মাথা খেও না।) |
আকাশে থুথু ফেলা | নিজের ক্ষতি করা। |
আকাশে ফাঁদ পেতে চাঁদ ধরা | অবাস্তব/অলীক/অসার কল্পনা/চিন্তা; |
আকাশের চাঁদ | অসম্ভব বা দুর্লভবস্তু; বহু কাঙ্ক্ষিত বস্তু |
আকাশের চাঁদ/তারা পাড়া | অসম্ভবকে সম্ভব করা। |
আকাশ/আশমানের চাঁদ হাতে পাওয়া | আশাতীত বা দুর্লভ বস্তুপ্রাপ্তি (চাকরি পেয়েছে যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে।) |
আকাশের তারা গোনা | অকাজে অলসভাবে সময় কাটানো; |
আকুলি-বিকুলি করা | অতিশয় ব্যাকুল হওয়া; উৎকণ্ঠিত হওয়া; ব্যস্ত সমস্ত হয়ে পড়া (খবরটা শোনার জন্য মন আকুলি-বিকুলি করছে)। |
আক্কেলগুড়ুম | আকস্মিক ভয়ে বুদ্ধিলোপ; হতবুদ্ধি; হতভম্ব অবস্থা (পাত্রপক্ষের দাবীর বহর শুনে পাত্রীপক্ষের আক্কেলগুড়ুম।) |
আক্কেলদাঁত না গজানো | বুদ্ধিবিবেচনা/কান্ডজ্ঞান না হওয়া; অপরিণত বুদ্ধির পরিচয় দেওয়া (বয়স তো হল এখনো আক্কেলদাঁত গজালো না?) |
আক্কেল সেলামী | গুনাগার; নির্বুদ্ধিতার দণ্ড (বোকামী করে একগাদা অর্থ আক্কেলসেলামী দিলাম)। |
আক্কেল হওয়া | বিপদে পরে শিক্ষা নেওয়া; শাস্তি পাওয়া (বৃষ্টির দিনে বেড়িয়ে অনেক আক্কেল হয়েছে)। |
আখের গুছানো | ভবিষ্যৎ গুছানো; স্বার্থ হাসিল করা। |
আখের বুঝে চলা | পরিণতির কথা চিন্তা করে চলা; ভবিষ্যতের কথা ভেবে কাজ করা। |
আখেরি জমানা | অন্তিমকাল, শেষযুগ, কলিযুগ। |
আখেরে লাভ | অপেক্ষা করলে লাভ আছে; শেষপর্যন্ত লাভ হয়। |
আগড় বাগড়/আগড়ম বাগড়ম কথা | অপ্রয়োজনীয়; অপ্রাসঙ্গিক; অর্থহীন; অসংলগ্ন/আজেবাজে কথাবার্তা; প্রলাপ (আগড়মবাগড়ম বকো না); |
আগড়বাগড় খেয়ে পেট ভরানো | অসার খাদ্য খেয়ে উদরপূর্তি করা। |
আগাগোড়া | শুরু থেকে শেষপর্যন্ত (আগাগোড়া আমি এককথা বলে আসছি)। |
আগা-পাছতলা/ আগাপাস্তালা | আপাদমস্তক; উপর থেকে নীচ পর্যন্ত; সর্বাঙ্গ (আগাপাস্তালা লেপমুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে।) |
আগামাথা | আদি বা অন্ত; শুরু বা শেষ (আগামাথা কিছুই বুঝতে পারছি না)। |
আগুন দেওয়া/ধরানো | উত্তেজিত করা; ঝগড়া সৃষ্টি করা। |
আগুন নিয়ে খেলা করা | অনিষ্টকর জিনিসে হাত দেওয়া; বিপজ্জনক বিষয় নিয়ে ছিনিমিনি খেলা; বিপদের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা ইত্যাদি। |
আগুন পোয়ানো/পোহানো | আগুনের কাছে বসে হাত পা গরম করা (আগুন পোহাতে গেলে ধোঁয়া সইতে হয়)। |
আগুন লাগা | অতি দুর্মূল্য হওয়া (বাজারে আগুন লেগেছে)। |
আগুন-লাগা সংসার | নষ্ট হচ্ছে এমন সংসার। |
আগুন লাগানো | উত্তেজিত করা; ঝগড়া সৃষ্টি করা; রাগিয়ে দেওয়া। |
আগুন হওয়া | অতি ক্রুদ্ধ হওয়া; প্রচণ্ড রেগে যাওয়া (তোমার কথা শুনে সে একেবারে রেগে আগুন।) |
আগুনে ঘি ঢালা/ধুনো দেওয়া | উত্তেজনা/রাগ বাড়ানো। |
আগুনে জল ঢালা/পড়া | রাগ কমানো/প্রশমিত হওয়া। |
আগুনের কাছে ঘি | এমন দুইবস্তুর কাছাকাছি আসা, যাতে দ্বিতীয়ের ক্ষতি হয় |
আগুপাছু/আগেপাছে করা | ইতঃস্তত করা (আগপাছু করলে কোন কাজ ভাল হয় না।) |
আগেআগে | সামনে (পতাকা হাতে করে মাতঙ্গিনী হাজরা আগে আগে চলছিলেন।) |
আগেভাগে | আগের থেকে; পূর্বেই; সবার আগে; সর্বাগ্রে (আগেভাগে খবর দিও।) |
আঙুর ফল টক | অলভ্য জিনিস মন্দ। |
আঙুল কামড়ানো | আফশোষ করা। |
আঙুল ঘুরিয়ে পাঁচিল দেওয়া | ক্ষুদ্রচেষ্টায় বিরাট কর্ম করার প্রচেষ্টা। |
আঙুল ফুলে কলাগাছ | হঠাৎ বড়লোক; হঠাৎ প্রচুর ধনসম্পত্তির মালিক (আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে রামবাবু ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন।) |
আঙুল মটকানো | অভিশাপ দেওয়া (আঙুল মটকে আমার নামে কী বললে?) |
আচমকা সুন্দরী | আপাতঃ সুন্দরী না হলেও হঠাৎ দেখলে সুন্দরী মনে হয়; ক্ষণিক রূপের মোহসৃষ্টিকারিণী। |
আছোলা বাঁশ খাওয়া | কষ্টকর যন্ত্রণা ভোগ করা- অশালীন গালিবিশেষ (ফেসবুক কর আর আছোলা বাঁশ খাও।) |
আছোলা বাঁশ দেওয়া | কারো সর্বনাশ করা। |
আছোলা বাঁশ নেওয়া | যেচে নিজের বিপদ ডেকে আনা; ইচ্ছা করে বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে জড়িয়ে পড়া। |
আজকাল | অধুনা; বর্তমানকাল (আজকাল কাউকে বিশ্বাস করা যায় না)। |
আজকাল করা | অযথা দেরি করা; গড়িমসি করা; ইচ্ছা করে দেরী করা। |
আজকাল বাদে | আজ ও আগামীকাল- এই দু’দিন বাদে। |
আজকালের মধ্যে | অনতিবিলম্বে; দু’একদিনের মধ্যে (আজকালের মধ্যে বৃষ্টি নামবে।) |
আজকের মত | আজকের উপযোগী (আজকের মত ক্ষান্ত দাও।) |
আজ খেতে কাল নেই | কোনরকমে দিন গুজরান করা। |
আজ গেলে দুদিন হবে | অসহনীয় ভোগান্তির দিন যেন কাটতেই চায় না। |
আজ-নয়-কাল | গড়মসি; দীর্ঘসূত্রিতা; অযথা সময় নষ্ট। |
আজ-বাদে-কাল | কয়েকদিন পর; বেশি দেরী নেই; শীঘ্রই (আজ-বাদে-কাল পরীক্ষা, এখন পড়তে বস নি?) |
আজেবাজে | অকেজো; অবজ্ঞার যোগ্য; তুচ্ছ (যত আজেবাজে কথা)। |
আটকড়াই/ আটকৌড়ে | সন্তান জন্মের অষ্টমদিনে আটরকম কলাইভাজা বিতরণের সংস্কার। |
আটকপালী/কপালে | অভাগী/অভাগা; হতভাগী/ভাগা; সমতুল- উঁচ-কপালিকপালে; উনপাঁজুরে, পোড়া-কপালে, হাভাতে ইত্যাদি। |
আটকাট/কাঠ/ঘাট | সবদিক; সব বিষয় (আটকাঠে দড়, তো ঘোড়ার উপর চড়)। |
আট কুঠুরি নয় দরজা | শরীরের আটটি গ্রন্থি এবং নয়টি প্রবেশ ও বহির্দ্বার (মাথার খুলি, ডান-বাম দুই ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড, পাকস্থলী, দুই কিডনি আর কোলন এবং দুই চোখ, দুই নাকের ফুটো, মুখ, দুই কানের ফুটো, আর বাকি দুইটা জননাঙ্গ ও পায়ু)। |
আটকুড়ের ব্যাটা১ | পুত্রহীনের সন্তান; অসম্ভব ব্যাপার, যা হয় না। |
আট্কে বাঁধা | আটকিয়া বাঁধা- দ্রষ্টব্য |
আটখান/খানা হওয়া | আনন্দে অধীর হওয়া ফেটে পড়া (আহ্লাদে আটখানা, মূল্য পাঁচ-আনা)। |
আটঘাট বাঁধা | সম্ভাব্য সবরকম অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকা; সবদিক সামলে চলা বা সুরক্ষিত করা; সাবধান হওয়া (আটঘাট বেঁধে কাজে নামবে)। |
আটপৌরে কাপড়/শাড়ী | সবসময়ে ঘরে পরার উপযোগী জামাকাপড়। |
আটপৌরে ভাষা | কথ্যভাষা; চলতি সাধারণ বা সর্বদা ব্যবহারের ভাষা। |
আটা পেষাই করা | দুরমুশ করা; খুব পিটাই করা; বেদম প্রহার করা। |
আটাশে ছেলে | আটমাসে ভূমিষ্ঠ ছেলে। |
আটেকাটে/পিটে/পিঠে | কষ্টসহিষ্ণু, অষ্টেপৃষ্ঠে, অত্যন্ত পরিশ্রমী, চৌকশ, সকলদিকে ভারবহনে সক্ষম, সকল বিষয়ে নিপুণ (আটে পিঠে দড় তবে ঘোড়ার পিঠে চড়’); |
আটুপাটু | আর্তভাব; কাতরতা; ব্যাকুলতা (সবসময় আটুপাটু করোনা তো।) |
আঠা | ফাঁদ (পিরিতি কাঁঠালের আঠা)। |
আটারো/আঠারো আনা | অতি নিশ্চয়তা; যথেষ্ট সম্ভাবনা (আজকে বৃষ্টি হওয়ার আঠারো আনা সম্ভাবনা)। |
আটারো/আঠারো-ঘা | নানাপ্রকার ঘা বা ব্যাধিতে আক্রান্ত (বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা)। |
আটারো/আঠারো মাসে বছর | অকর্মণ্যতা; আলস্য; কুঁড়েমি; দীর্ঘসূত্রিতা; অহেতুক কালক্ষেপণের ফলে কাজে বিলম্ব |
আড্ডা গাড়া | অস্থায়ী বাসা বাঁধা,ডেরা বাঁধা (এক সাধু এসে গ্রামের বটগাছের তলায় আড্ডা গেড়েছে।) |
আড়ং ধোলাই | উত্তম-মধ্যম দেওয়া; সপাটে আছাড় মারা (বেশি বাড়াবাড়ি করলে আড়ং ধোলাই হবে)। |
আড়কাঠি | খবরসংগ্রাহক; কুলিমজুর সরবরাহকারী। |
আড়কালা | এক কানে শুনতে পায় না এমন। |
আড় নেই | মুখের লাগাম নেই; চোখের পর্দা নেই। |
আড়পাগলা | আধ-পাগলা; ক্ষেপাটে। |
আড়বগ্গা | একগুঁয়ে; একরোখা; গোঁয়ার। |
আড়বুঝ | বিপরীতবুদ্ধি; বাঁকাবুদ্ধি; উল্টা বোঝে এমন। |
আড় ভাঙা | শরীরের জড়তা কাটানো। |
আড়মোড়া ভাঙা | ঘুম থেকে উঠে শরীরের আড়ষ্টভাব কাটান। |
আড় হওয়া | কাত হয়ে কষ্টেসৃষ্টে শোয়া (আড় হয়ে পড়ে আছি)। |
আড়া | বক্রস্বভাবের লোক (লোকটা বেজায় আড়া)। |
আড়াআড়ি | পরস্পর দ্বেষাদ্বেষি/রেশারেশি (দুজনের মধ্যে আড়াআড়ি চলছে)। |
আড়াই অক্ষরে | অল্পকথায়; সংক্ষেপে (আড়াই অক্ষরে গল্প শেষ)। |
আড়াই দিনের বাদশাহী | অল্পদিনের জন্য বিলাসিতা। |
আড়াই হাত (তালগাছের) | কোনো কাজের শেষ এবং সবচেয়ে কঠিন অংশ। |
আড়ালে আবডালে | লোকচক্ষু এড়িয়ে; লুকিয়ে চুরিয়ে (আড়ালে আবডালে তার সম্পর্কে অনেক কথাই শোনা যায়)। |
আড়িপাতা | আড়াল থেকে লুকিয়ে অন্যের কথা শোনা। |
আড়েহাতে লওয়া | প্রতিশোধ নেওয়া; ভীষণ শত্রুতা করা। |
আড়েহাতে লাগা | উঠেপড়ে লাগা; উৎসাহের সঙ্গে; প্রাণপণে চেষ্টা করা (যথাসময়ে কাজটা শেষ করতে সে আড়েহাতে লেগেছে)। |
আণ্ডাবাচ্চা | ছোটছোট শিশুসন্তান,ছানাপোনা, ক্রোড়স্থ সন্তান। |
আতান্তর | অসুবিধা; দুঃখকষ্ট; দুর্ভাবনা; বিপদ; সংকট (মহা আতান্তরে পড়া গেল দেখছি)। |
আতালিপাতালি/আথালিপাথালি | ব্যাকুল ও ব্যস্ত হয়ে এদিক-ওদিক চাইতে চাইতে (আথালিপাথালি করে খুঁজে বেড়াচ্ছে)। |
আতিপাতি | তন্নতন্ন করে (আতিপাতি করে খুঁজেছি কোথাও নেই)। |
আতুআতু/ আতুপুতু করা | অতিরিক্ত যত্ন করা; আদরযত্ন বা সাবধানতার বাড়াবাড়ি করা; সন্তানপালনে যত্ন ও সতর্কতার বাড়াবাড়ি (বেশি আতুপুতু করলে ছেলে মানুষ হবে না) |
আত্মঘোষ | যে নিজের ঢাক নিজেই পেটায়। |
আত্ম রেখে ধর্ম | নিজের স্বার্থ সবার আগে। |
আত্মসর্বস্ব | স্বার্থপর; শুধু নিজেকে নিয়ে চিন্তা। |
আত্মাপুরুষ/রাম | পুরুষনামী দেহস্থ আত্মা প্রাণ/মনপাখি (আত্মারাম খাঁচাছাড়া)। |
আত্মারাম খাঁচাছাড়া হওয়া | নিদারূণ ভয়ে মৃতপ্রায় হওয়া বা মারা যাওয়া; সমতুল্য বাগধারা- অক্কা পাওয়া, ঈশ্বরপ্রাপ্তি, গঙ্গাপ্রাপ্তি; পঞ্চত্বপ্রাপ্তি; পটল তোলা; শিঙে ফোঁকা ইত্যাদি। |
আত্মারাম গুটিয়ে/শুকিয়ে যাওয়া | অত্যন্ত ভয় পাওয়া; ভয়ে আড়ষ্ট/পাংশু হওয়া। |
আথালপাথাল/ আথালিপাথালি | ব্যাকুল ও ব্যস্ত হয়ে এদিক-ওদিক চাইতে চাইতে; চারদিকে; যেখানে-সেখানে সর্বত্র (আথালিপাথালি করে খুঁজে বেড়াচ্ছি)। |
আদব-কায়দা/ আদব-তামিজ | ভদ্রব্যবহার; শিষ্টাচার (শুধু হাওয়া খেয়ে বড় হয়েছে আদব-কায়দা কিছু শেখেনি।);সমার্থক বাগধারা- আচার-আচরণ। |
আদব-কায়দাদুরস্ত | ব্যবহারে বিনম্র; শিষ্টাচারী। |
আদবের খেলাপ/বরখেলাপ | ভদ্রতাবিরুদ্ধ; শিষ্টাচারবহির্ভূত; শিষ্টাচার লঙ্ঘন। |
আদমের সময় | অতি প্রাচীনকালে; বহুকাল আগে; আদিকাণ্ডে; আদ্দিকালে, ভূষণ্ডির সময়ে; মান্ধাতার আমলে ইত্যাদি। |
আদরে বাঁদর | প্রশ্রয় পেয়ে নষ্ট (আদরে বাঁদর বনে)। |
আদা ওষুধের আধা | আদা অর্ধেক রোগ ভালো করে। |
আদা জল খেয়ে পড়ে থাকা | কার্যসিদ্ধির জন্য ধর্ণা দেওয়া। |
আদাজল খেয়ে লাগা | দৃঢ়সংকল্প নিয়ে কাজ করা; নাছোড়বান্দা হয়ে লাগা; প্রাণপণ চেষ্টা করা; মরিয়া হয়ে লাগা, উঠেপড়ে লাগা (পরীক্ষা আসন্ন, তাই আদাজল খেয়ে পড়তে বসেছ)। |
আদাড়বনে শিয়াল রাজা | নিজের এলাকায় সবাই প্রভুত্ব করে; |
আদাড়ের হাঁড়ি | অনাদৃত ব্যক্তি; নীচব্যক্তি; নোংরামনের লোক- গালিবিশেষ (আদাড়ের হাঁড়িকে কেউ পোছে না)। |
আদায় কাঁচকলায় সম্পর্ক | চিরবৈরিতা, তিক্তসম্পর্ক, পরস্পর শত্রুভাবাপন্ন, বিরুদ্ধ স্বভাবযুক্ত; সমার্থক বাগধারা- অহিনকুলসম্পর্ক; দা-কুমড়া সম্পর্ক; বাঘে-গরুতে সম্পর্ক; বুনো ওল বাঘা তেঁতুল সম্পর্ক; সাপ-নেঊলে সম্পর্ক। |
আদার ব্যাপারী | ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী; নগণ্য/সামান্য ব্যক্তি, সামান্য বিষয়ে ব্যস্ত ব্যক্তি (আদার ব্যাপারর জাহাজের খোঁজ নেয়); সমার্থক বাগধারা- উলুখাগড়া; এ-ও-সে; চুনোপুঁটি ইত্যাদি। |
আদিরস | কাম ও প্রেমরস; শৃঙ্গাররস। |
আদুরে গোপাল | অত্যন্ত আদরে লালিত-পালিত সন্তান; লাই দিয়ে যার ইহকাল পরকাল শেষ; অতিরিক্ত আহ্লাদী। |
আদেখলা/আদেখলাপনা | দেখার বা পাওয়ার জন্য এত ব্যগ্র যে মনে হয় পূর্বে কখনো কোনো ভালো জিনিস দেখেনি বা ভোগ করেনি। |
আদ্যিকালের বদ্যিবুড়ো | অত্যন্ত প্রাচীন বা অভিজ্ঞব্যক্তি। |
আদরু-পেঁদরু | সাহেবিয়ানার আতিশয্য প্রকাশকারী ব্যক্তি। |
আধ/আধাখেঁচড়া | এলোমেলো; বিশৃঙ্খল (আধা খেঁচড়া ব্যবস্থা)। |
আধ/আধা-পাগলা | ক্ষ্যাপাটে; পাগলের মত হাবভাববিশিষ্ট; বাতিকগ্রস্ত। |
আধ/আধাবয়সী | মাঝবয়সী; প্রৌঢ়। |
আধকামারিয়া | অর্বাচীন; হাতুড়ে (আধকামারিয়া উকিল কেসটা ডুবিয়ে দিল)। |
আধবুড়ো | প্রায় বুড়ো; প্রৌঢ়। |
আধমণি কৈলাস | প্রচুর পরিমাণে খেতে পারে এমন লোক। |
আধমরা | উদ্দীপনাহীন নির্জীব; নিস্তেজ |
আধিব্যাধি | মানসিক ও শারীরিক রোগ (‘ব্যাধির চেয়ে আধি হল বড়’)। |
আধো আধো | অসম্পূর্ণ; অপরিস্ফুট ভাবার্থে দ্বিত্বশব্দ (শিশুদের আধো-আধো বুলি)। |
আধো-আধোপনা | ব্যঙ্গে- শিশুসুলভ/বালকোচিত ব্যবহার। |
আনকা/আনোখা | অচেনা; অজানা; ঠিকানাহীন; বেঠিক (আনকা লোকের আনাগোনা বেড়ে গেছে।) |
আনকোরা | অনিভজ্ঞ; কাঁচা (আনকোরা যত নন-ভায়োলেন্ট ননকো’র দলও নন খুশী’)। |
আনচান | অস্থির; চঞ্চল (‘মা বলিতে প্রাণ করে আনচান’)। |
আন-তাবড়ি | এলোমেলো; আন্দাজে (আনতাবড়ি ঢিল ছুঁড়ছে)। |
আনন্দে/আলহাদে আটখানা | বেজায় খুশি; হেসে কুটিকুটি |
আনাগোনা/যানা | জন্মমৃত্যু (দুনিয়াদারি মুসাফিরি সিরিফ আনা/যানা)। |
আনাচ-কানাচ/আনাচে-কানাচে | অস্থানকুস্থান; চারপাশ; জানা-অজানা সবস্থান (ঘরের আনাচকানাচ সমস্ত জায়গা খুঁজেছি)। |
আন্দাজে ঢিল ছোঁড়া/মারা | অনুমাননির্ভর কাজ করা; অনিশ্চিতসিদ্ধির লক্ষ্যে চেষ্টা করা। |
আপকা ওয়াস্তে | নির্দিষ্টব্যক্তির জন্য; চাটুকার; তোষামুদে |
আপ-খোরাকি | নিজের খরচে খাবার ব্যবস্থা করার চাকরির সর্ত। |
আপদ | বিরক্তি-উৎপাদনকারী ব্যক্তি বা বস্তু (এই আপদটা বিদায় হলে বাঁচি)। |
আপদ-বালাই/ আপদ-বিপদ | নানা সমস্যা; বিপদকাল (আপদ-বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত); সমার্থক বাগধারা- ঝড়ঝাপটা; ঝুট-ঝঞ্ঝাট/ঝামেল; দুঃখদুর্দশা; বাধাবিঘ্ন; বাধাবিপত্তি ইত্যাদি। |
আপন কথাই পাঁচকাহন | আত্মপ্রচারসর্বস্ব; নিজের প্রাধান্য স্থাপনের চেষ্টা; আত্মঘোষ। |
আপন কোলে ঝোল টানা | নিজের স্বার্থ আগে দেখা। |
আপন গণ্ডা | স্বার্থ (আপনগণ্ডা সবাই বুঝে নেয়)। |
আপন গাঁয়ে কুত্তা শের | নিজের এলাকায় সবাই প্রভুত্ব করে; সমার্থক বাগধারা- আদাড় বনে শিয়াল রাজা, ভেড়া গোয়ালে বাছুর মোড়ল ইত্যাদি। |
আপনা-আপনি | নিজ থেকে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে; স্বতঃস্ফুর্তভাবে; স্বাভাবিকভাবে (যদি থাকে নসীবে, আপনা আপনি আসিব)। |
আপন পাঁঠা লেজে কাটা | স্ব-ইচ্ছায় কাজ করার পক্ষে ওকালতি। |
আপন/আপনার পায়ে কুড়োল মারা | নিজের অনিষ্ট ক্ষতি বা সর্বনাশ করা। |
আপনা হাত জগন্নাথ | নিজের সবকিছু ভালো; নিজের প্রয়াসই যথার্থ (আপনহাত জগন্নাথ পরের হাত এঁটোপাত)। |
আপনার ঢাক আপনি বাজানো/ পিটানো/ আপনার কথা পাঁচকাহন | নিজেই নিজের গুণগান করা; আত্মপ্রশংসা করা; নিজের কথা পুনঃপুনঃ উল্লেখ করা; নিজের বক্ত্যব্যকে গুরুত্ব দেওয়া। |
আপনি বাঁচলে বাপের নাম | নিজে বেঁচে থাকলে তবেই পিতৃপুরুষের নাম বলা যায়; নিজের স্বার্থের প্রতি সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া। |
আপ্তবাক্য | অভ্রান্ত বাক্য; দোষগুণ বিচার না করে সত্য বলে গৃহীত বাক্য; সমার্থক বাগধারা- বেদবাক্য |
আফশোস/আফসোস | আক্ষেপ; দুঃখ; পরিতাপ; মনস্তাপ (যা গেছে তা গেছে এখন আফশোস করে কোন লাভ নেই, ভুলের শাস্তি পেতেই হবে।) |
আবড়াখাবড়া | অসমান, উঁচু-নিচু, বন্ধুর (আবড়া-খাবড়া রাস্তায় চলা মুশকিল); সমার্থক বাগধারা- এবড়োখেবড়ো; উভড়খাবড়া (হিন্দি) |
আবদার | অন্যায়/অসঙ্গত/যুক্তিহীনদাবী (জনগ্ণের সব আবদার সমর্থনযোগ্য নয়) |
আবর্জনা | অবাঞ্ছিতব্যক্তি (আধুনিক ধারণায় বৃদ্ধরা সংসারের আবর্জনা)। |
আবহমানকাল | অদ্যবধি; চিরকাল; বহুকাল (আবহমানকাল ধরে এই নিয়ম চলে আসছে।) |
আবহাওয়া | অবস্থা; পরিস্থিতি; হাল (দেশের রাজনৈতিক আবহাওয়া খুবই খারাপ।) |
আবাগের বেটা ভূত | হতভাগ্যের বেটা অপদার্থ; কাণ্ডজ্ঞানহীন- গালিবিশেষ |
আবাদী জমি | চাষযোগ্য জমি। |
আবোল-তাবোল | অর্থহীন/অসংলগ্ন/এলোমেলো কথাবার্তা (কি আবোল-তাবোল বকছো?) |
আব্রু | আভিজাত্য; মর্যাদা; মানসম্ভ্রম (জীবনে আব্রু আছে, মরণে কোন আব্রু নাই) |
আভাঙা জল | ঘাটের যে জল ভোরবেলায় কেউ স্পর্শ করে নি (হিন্দু বিয়ের আচারে এই জলের প্রয়োজন হয়।) |
আম না হতে আমসি/ আমসত্ব | আগাম সুখকল্পনা; কারণের আগে কাজ; সমার্থক ভাগধারা- কালনেমির লঙ্কাভাগ; গাছ না উঠতে এককাঁদি; গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল; রাবণের ছাদনাতলা; রাম না হতেই রামায়ণ; হবুছেলের অন্নপ্রাশন ইত্যাদি। |
আমগন্ধি | কাঁচাগন্ধযুক্ত; যে খাবার পুরো রান্না হয়নি। |
আমড়া কাঠের ঢেঁকি | অপদার্থ, কোন কাজের নয়; সমার্থক বাগধারা- কলাখোলার নৌকা, ধানকাঠের তক্তা, ধানগাছের মই ইত্যাদি। |
আমড়া গাছে আম ফলে না | কারো চরিত্র ও কর্ম তার বংশকুলের বিপরীত হয় না; বিপরীত বাগধারাও সত্য, যেমন- দৈত্যকুলে প্রহ্লাদ। |
আমতা আমতা করা | ইতস্ততঃ বা দ্বিধা করা; ‘হাঁ কি না’ খোলসা না-করা; স্বীকারের ইচ্ছা নেই আবার অস্বীকারের উপায়ও নেই (অত আমতাআমতা করতে হবে না যা বলার বলে ফেল) |
আমল দেওয়া | কর্ণপাত না করা; গুরুত্ব/পাত্তা/প্রশ্রয় না দেওয়া; গ্রাহ্য না করা (সবার কথায় আমল দিও না।) |
আমসি হওয়া (মুখ) | শুকিয়ে বিবর্ণ বিশীর্ণ হওয়া। |
আমি/আমিত্ব | অহঙ্কার; অহম্বোধ (আমি যাবে মলে)। |
আমির-উমরা/ আমীর ওমরাহ | সমাজের গণ্যমান্য; প্রভাবশালী; বিত্তশালী; প্রচুর ক্ষমতাসম্পন্ন লোকজন (আমির-উমরাদের চালচলন/মেজাজই আলাদা।) |
আমে দুধে এক হয় আঁটি যায় গড়াগড়ি | উপরতলায় মিল হয় সাধারণে বঞ্চিত হয়। |
আয়নায় মুখ দেখা | নিজের সুন্দর মুখের মত চরিত্রও সুন্দর করা। |
আয়ারাম | দলবদল করে অন্যদল থেকে আসা সদস্য। |
আয়েন্দা | ভবিষ্যৎ; আগামী দিন (আয়েন্দা কিছু হ’লে তার জন্য তুমি দায়ী থাকবে)। |
আয়াশ/আয়েশ | আরাম; আমোদ; বিলাস; স্ফূর্তি (কাজের ফাঁকে একটু আয়েশ করে নিচ্ছি)। |
আয়াস | যত্ন; প্রচেষ্টা; প্রয়াস (বিনা আয়াসে সিদ্ধি নাই)। |
আয়ীবুড়ি | পাকাপাকা কথা বলা অল্পবয়স্কা মেয়ে। |
আর একটু হলে | বাড়াবাড়ি হ’লে; বিষয় গুরুতর হলে (আর একটু হলে পড়ে যেতাম)। |
আর কতই বা | বেশি কিছু নয়। |
আরশির মুখে পড়শি দেখা | নিজের মত অপরকে ভাবা। |
আরশুলা আবার পাখি | উত্তমের সাথে অধমের তুলনা হয় না। |
আলগা থাকা | কোন কিছুতে জড়িত না হওয়া; নির্লিপ্ত থাকা। |
আলগা ভাব | আন্তরিকতাহীন; লোক দেখানো ভাব। |
আলগা মন্তব্য | অনভিপ্রেত/অসঙ্গত/বেফাঁস মন্তব্য |
আলগা মুখ | অসংযত কথাবার্তা। |
আলটপকা | আচমকা; অপ্রত্যাশিতভাবে; বিনাচেষ্টায় হঠাৎ (আলটপকা কোন মন্তব্য করো না।) |
আল্টিমেটাম | শেষ সতর্কীকরণ। |
আলটুফালটু/আলতুফালতু কথা | আজেবাজে/অনাবশ্যক/অর্থহীন কথাবার্তা (আলটুফালটু বকো না।) |
আলাইবালাই | আপদবিপদ (আলাইবালাই এমন কথা বলতে নেই; আলাইবালাই দূর হোক)। |
আলাদীনের প্রদীপ | অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটানোর কারিগর; আশ্চর্য জিনিষ। |
আলাভোলা | সহজ-সরল; বেখেয়ালি; নিতান্ত ভালমানুষ; সমার্থক বাগধারা ভোলে-ভালা; সাদাসিধে। |
আলালের ঘরের দুলাল | ধনীর ঘরের অতি আদুরে ও প্রায় ক্ষেত্রে বখাটে ছেলে। |
আলুথালু | অসংবৃত; অসংযত; শিথিল অর্থে- অনুকার শব্দ (বিবস্ত্র বেশে আর আলুথালু কেশে) |
আলুর দোষ | চরিত্রদোষ; লাম্পট্য; মেয়েদের প্রতি পুরুষের মাত্রাতিরিক্ত ও অশোভন আসক্তি |
আলেয়া/ আলেয়ার আলো | দুর্লভ বা বিভ্রান্তিকর বস্তু; ধাঁধা; প্রহেলিকা; মিথ্যা মায়া (আলেয়ার পিছনে ছুটিও না; জীবন আঁধারময় হবে)। |
আলেয়ার পিছনে ছোটা | দুর্লভ বস্তুর পিছনে ছোটা |
আলোয় আলোয় | দিনেদিনে; দিন থাকতে থাকতে (আলোয়-আলোয় বাড়ি ফিরতে হবে)। |
আল্লাকা পেয়ারা হো গয়া | মারা গেছেন। |
আল্লার কুদতৎ | অলৌকিক কাণ্ড। |
আশকারা | প্রশ্রয় (তোমার আশকারাতেই ছেলেটা উচ্ছন্নে গেছে।) |
আশনাই | প্রণয়; আসক্তি, অবৈধ প্রণয় (‘মন যত বলে আশা নাই, হৃদে তত জাগে আশনাই’)। |
আশপাশ | কাছাকাছি জায়গা; নিকটবর্তী চারদিক ভাবার্থে- অনুকার শব্দ (আশপাশ থেকে আওয়াজ আসছে)। |
আশমান-জমিন ফারাক | দূরতিক্রম্য ব্যবধান; বিশাল পার্থক্য (দুই ভাইয়ের আচার-ব্যবহারে আশমান-জমিন ফারাক।); সমার্থক বাগধারা- আকাশ পাতাল তফাৎ। |
আশমানের চাঁদ হাতে পাওয়া | দুষ্প্রাপ্য জিনিস লাভ করা। |
আশীসিক্কা ওজনের চড় | প্রচণ্ড চপেটাঘাত। |
আষাঢ়ে গল্প | আজগুবি/কাল্পনিক কাহিনী; |
আষ্টেপৃষ্ঠে | চারিদিক থেকে; সর্বাঙ্গ ঘিরে; সারা অঙ্গে (দুস্কৃতিটাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখা হল।) |
আসতে কাটে যেতে কাটে | উভয়সঙ্কট; যে অবস্থা থেকে সহজে নিস্তার পাওয়া যায় না; সমার্থক বাগধারা- শাঁখের করাত। |
আসতে ছাগল, যেতে পাগল | তর-সয়-না; ধৈর্যহীন। |
আসন টলা | ক্ষমতা হারানোর উপক্রম। |
আসন্নকাল | বিপদকাল; মরণকাল (রাজার আসন্নকাল সমাসন্ন।) |
আসমান-জমিন ফারাক | দূরতিক্রম্য ব্যবধান; সীমাহীন পার্থক্য (দুইভাইয়ের মধ্যে আসমান জমিন ফারাক।) |
আসমানের চাঁদ হাতে পাওয়া | দুষ্প্রাপ্য জিনিস লাভ করা। |
আসর গরম করা | বিচিত্র কথাবার্তায় উদ্দীপনা সৃষ্টি করা; সরস কথায় সভায় উপস্থিত সকলকে মোহিত করা (আসর গরম করা বক্তৃতা)। |
আসর জমানো/মাতানো | আসরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা; বাকচাতুর্য এবং হাস্যপরিহাসে আসরকে আনন্দোচ্ছল করা। |
আসরে নামা | কাজে অবতীর্ণ হওয়া। |
আসল থেকে সুদের কদর বেশি | বাবা-মায়ের কাছে ছেলে-মেয়ে থেকে নাতি-নাতনির টান বেশি। |
আসা-যাওয়া | দেখা-সাক্ষাৎ; মেলামেশা (পাশাপাশি থাকে অথচ উভয়ের মধ্যে আসা যাওয়া নেই।) |
আসানসোলে কয়লা চালান | যার আছে তাকে আরও দেওয়া; তোষামোদ করা; সমার্থক বাগধারা- তেলা মাথায় তেল দেওয়া; ব্যঙের মাথায় ছাতি ধরা ইত্যাদি। |
আসে যায় | গুরুত্বপূর্ণ; ক্ষতিবৃদ্ধি হয়। |
আসতে যেতে গলা কাটা | সকল ব্যবহারেই বঞ্চনা করা; সমার্থক বাগধারা- শাঁখের করাত। |
আস্ত কেউটে | ভয়ানক বিপজ্জনক লোক। |
আস্ত-না-রাখা | মেরে হাড়গোড় গুড়িয়ে দেওয়া। |
আস্ত পাগল | পুরাদস্তুর পাগল। |
আস্ত হনুমান | বিদ্রুপে- সকল অপকর্মের হোতা |
আস্ত শয়তান | চুড়ান্ত শয়তান; শয়তানের সর্দার (তুমি একটা আস্ত শয়তান।) |
আস্তানা গাড়া | সাময়িকভাবে কোথাও বসবাস শুরু করা। |
আস্তিন গুটানো | মারামারি করতে উদ্যত; ভয় দেখানো (রাজনৈতিক ময়দানে দুইদল আস্তিন গুটাচ্ছে।) |
আহাম্মকের গলায় দড়ি | আহাম্মক বারবার দোষ করে ও শাস্তি পায়। |
আহারনিদ্রা | যাবতীয়/সব কাজ (আমি আহারবনিদ্রা ছেড়েে তোমার জন্য বসে আছি)। |
আহুঃ সপ্তপদী মৈত্রী | যার সাথে সাত পা হাঁটা যায় তার সাথে বন্ধুত্ব হয়। |
আহ্লাদী পুতুল | অন্যায় আবদারকারী শিশু। |
আহ্লাদে আটখানা/ডগমগ | অত্যন্ত/বেজায় খুশি; আনন্দে আত্মহারা (আহ্লাদে আটখানা, মূল্য পাঁচআনা)। |
আহ্লাদে গোপাল | অনুচিত আদরে বিগড়ানো ছেলে। |
আহ্লাদে ফুটকড়াই | আনন্দের আতিশয্যে অত্যধিক বাকস্ফূর্তি। |
আহ্লাদে ফুটিফাটা | হেসে লুটোপুটি। |
আহ্লাদের প্রহ্লাদ | আদরের সন্তান। |